বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

পশ্চিমবঙ্গে ওয়াইসী, ভোটযুদ্ধে মেরুকরণের আভাস

পশ্চিমবঙ্গে ওয়াইসী, ভোটযুদ্ধে মেরুকরণের আভাস

রোববার (৩ জানুয়ারি) ভোরে বিনা নোটিশে হায়দারাবাদ থেকে কলকাতা দমদম বিমানবন্দরে নেমেই আলোচিত মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মীম) নেতা ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসী পৌঁছে যান হুগলির ফুরফুরা শরিফে। ফুরফুরা শরিফের পীর হযরত আবু বকর সিদ্দিকি (রহ.)-এর মাজাদ জিয়ারত করে তিন ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক সারেন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর সাথে। সংক্ষিপ্ত সফর শেষে বিকেলেই তিনি উড়ে যান দিল্লি।

ওয়াইসীর সাথে বৈঠকে অংশ নেন পীরজাদা আব্বাস, পীরজাদা নৌশাদ সিদ্দিকি, পীরজাদা বায়জিদ আমিন এবং সাবির গাফফার প্রমুখ সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ। আসাদউদ্দিনকে ফুরফুরা শরিফ ঘুরিয়ে দেখানো হয়। তাঁর আগমনের খবর পেয়ে কয়েক হাজার মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে সমবেত হন সেখানে। তিনি সাধারণ মানুষের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন।

ওয়াইসীর সাথে পুরো সফরে সঙ্গী ছিলেন সর্বভারতীয় সংখ্যালঘু যুবনেতা সাবির গাফফার। বার্তা২৪.কমকে তিনি টেলিফোনে জানান, ‘বাংলার রাজনীতিতে নতুন মোড় নিয়েছে, যার দেখা পাওয়া  যাবে গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের ময়দানে। দীর্ঘদিনের বঞ্চনার পর এবার আশার আলো দেখতে চলেছে বাংলার অসহায়, মজলুম মানুষেরা। ফুরফুরা শরীফে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে মীম সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়াইসির বৈঠক নতুন করে আশা জাগিয়েছে।’

‘বিহারের নির্বাচনে অভূতপূর্ব সাফল্যের পর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা জানিয়ে ছিলেন ওয়াইসী। হায়দারাবাদে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন তিনি বঙ্গ ভোটের কৌশল নিয়ে। অবশেষে শনিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৯টায় প্রথমবারের মতো পশ্চিমবঙ্গে আসার সিদ্ধান্ত জানান তিনি’, বলেন সাবির গাফফার।


মীম-এর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালের আসন্ন নির্বাচন ঘিরে বাংলায় কাজ শুরু করে দিয়েছেন তারা। নির্বাচনে আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বেই বাংলায় লড়বেন তাঁরা। ফুরফুরা শরিফে এসে সে কথা জানিয়ে দিলেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। বৈঠক শেষে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘বাংলায় আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বেই এগিয়ে যাব আমরা। তাঁর পাশে থাকব আমরা। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাকেই সমর্থন করব।’  ফুরফুরা সফর নিয়ে টুইটও করেন ওয়াইসি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মীমের আসাদউদ্দিন ও ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি একযোগে নির্বাচনী মাঠে অবতীর্ণ হলে ভোটযুদ্ধে স্পষ্ট মেরুকরণ ঘটবে। সংখ্যালঘু, দলিত, অবহেলিত, প্রান্তিক সম্প্রদায়ের মানুষের ভোট তাদের দিকে ঘুরে যাবে।

তবে অনেকেই মীম’কে বিজেপির বি-টিম বলছেন। তাদের মতে, তৃণমূলের ভোট কেটে বিজেপি’র বিজয় সুগম করবে এই জোট। কিন্তু ওয়াইসী এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বিজেপির ‘বি’ টিম হিসেবে কাজ করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের  নিয়ে যদি এতই চিন্তা, তাহলে গুজরাত যখন জ্বলছিল, কোথায় ছিলেন মমতা? উনি নিজেই তো বিজেপি-কে আটকাতে পারছেন না। এত লোক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাচ্ছেন, তাঁদের আটকাতে পারছেন না কেন? আসলে বিজেপি-র হাত শক্ত করেছে তৃণমূলই। গত লোকসভা নির্বাচনে তো বাংলায় লড়েনি মীম। তা সত্ত্বেও বিজেপি ১৮টা আসন পেল কী ভাবে?’

সংখ্যালঘু ভোটকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় এলেও, পরবর্তী কালে রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘু মানুষদের তেমন গুরুত্ব দেয় না বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ আসাদউদ্দিনের। তাই শুধুমাত্র দক্ষিণ ভারতে সীমাবদ্ধ না থেকে দেশের সর্বত্র দলের ভিত মজবুত করতে সক্রিয় হয়েছেন তিনি। ২০২১ সালের নির্বাচনে বাংলায় প্রার্থী দেবেন ঘোষণা করে আগেই চমকে দিয়েছিলেন আসাদউদ্দিন।

ওয়াইসীর বঙ্গ সফর সংক্ষিপ্ত হলেও নির্বাচনে তাঁর উপস্থিতির প্রথম প্রকাশ্য নমুণা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভোটের সঠিক মেরুকরণ ঘটাতে পারলে বিহারের পর পূর্ব ভারতের আরও একটি রাজ্যে নিজেদের উপস্থিতির জানান দেওয়া যাবে বলে নিশ্চিত মিম নেতৃত্ব। মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ১৩৭টি আসনই তাঁদের নজরে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech